দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষত পঞ্চগড় জেলায় তাপমাত্রা দ্রুত কমে যাওয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
পঞ্চগড় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যমতে, একদিনের ব্যবধানে জেলায় তাপমাত্রা ৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। আগের দিন এটি ছিল ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালবেলায় সূর্যের দেখা মিললেও ঠান্ডার দাপটে রোদের তাপ অনুভূত হচ্ছে না। হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রভাবিত এ অঞ্চলে প্রতিবছর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শীতের প্রকোপ দেখা যায়, যা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। দিনের তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকলেও শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ এবং দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপের বর্ধিতাংশের প্রভাবেই শীতল আবহাওয়া বজায় রয়েছে।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে দিনমজুর, চা শ্রমিক এবং পাথর শ্রমিকদের কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকেই দিনের শুরুতেই কাজে বের হলেও ঠান্ডার তীব্রতায় কাজের গতি মন্থর হয়ে পড়েছে, ফলে তাদের আয় কমে গেছে। স্থানীয় মানুষজনের জীবনযাত্রা এ সময়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
ঢাকায় তুলনামূলকভাবে শীতের অনুভূতি কম থাকলেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৌষের শেষে শীত আরও বাড়তে পারে এবং তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
সরকার এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ সময়ে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও সমন্বিত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।