বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জনগণের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, তাই বাংলাদেশে এই নামে কোনো রাজনৈতিক দল টিকে থাকতে পারবে না। তিনি আওয়ামী লীগকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘জাতীয় ঐক্য ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু না করে তাদের রাজনীতি বন্ধের দাবি তোলা স্ববিরোধী। বিএনপি সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এছাড়া, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সাংবিধানিক রাজনৈতিক সরকার প্রয়োজন। এজন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার। বিএনপি ইতোমধ্যে ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনা দিয়েছে, যা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি নির্বাচনকালীন সরকারকে দ্রুত একটি রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জুলাই-আগস্টের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব, তবে এর আগে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন। কেউ বলছেন আগে নির্বাচন, কেউ বলছেন আগে সংস্কার—কিন্তু আসলে দুটোই চলমান প্রক্রিয়া, যা একসঙ্গে বাস্তবায়ন করা উচিত।
প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা প্রশাসন ও বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, যা নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি সতর্ক করে দেন, সরকার সংস্কার কার্যক্রমে অযথা সময় নিলে জনগণ তা মেনে নেবে না।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল খান, সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম পারভেজ। এছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন।