আব্দুল্লাহ আল মারুফ, ফ্রেশ নিউজ:
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলা নাসরিন ওয়াজেদ মহিলা ডিগ্রি কলেজ চতুর্থ তলায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ এ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) এর আওতায় এটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার পার্টনার কংগ্রেস এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের দিকে যত্ন না নিলে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি জাতীয় স্বাস্থ্যখাতেও বাড়ে ব্যয়। তাঁর মতে, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য জৈব সার ব্যবহারে জোর দিতে হবে। আর যদি রাসায়নিক সার ব্যবহার করতেই হয়, তবে তা হতে হবে পরিমিত এবং সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে।
তিনি বলেন, “খাবারের মধ্যে থাকা অতিরিক্ত বিষাক্ত উপাদান এখন মানুষের অসুস্থতার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে শিশুদের উপরও। আগে সন্তান জন্মালে বাড়ির লোকজন জানতে চাইত ছেলে হয়েছে না মেয়ে। এখন প্রশ্ন উঠে সন্তান সুস্থ হয়েছে তো? অর্থাৎ প্রতিবন্ধী হয়নি তো? এটা আমাদের জন্য বড় এক সতর্কবার্তা। এর পেছনে মূল কারণ হলো, আমরা যথাযথভাবে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য পাচ্ছি না।
এ প্রসঙ্গে তিনি গ্রামের ও শহরের শিশুর খাদ্যাভ্যাসের পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, “গ্রামের ছেলেমেয়েরা পুষ্টিকর সবজি, মিষ্টি আলু, পাটশাক খেয়ে বড় হয়, তাই তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক দৃঢ়। এই পুষ্টির জোরেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করছে। অথচ শহরের শিশুরা খাচ্ছে ফাস্টফুড যার মধ্যে পুষ্টির ছিটেফোঁটাও নেই।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের কৃষক ভাইদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি উদ্যোক্তা হতে হবে। কৃষিকে ব্যান্ডিং করে পরিচিত করতে হবে যাতে দেশীয় কৃষিপণ্য দেশে-বিদেশে সমাদৃত হয়। কৃষিকে ব্র্যান্ড করেই আমাদের স্বাবলম্বী হতে হবে।
করোনাকালীন সময়ের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, যখন ইতালি, ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশে মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছিল, তখন বাংলাদেশের মানুষ ঘরে বসে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে আলু ভর্তা খেয়ে বেঁচে ছিল। এটাই আমাদের শক্তি। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন কৃষিতে বিপ্লব। কৃষিই হবে আমাদের আগামী স্বাবলম্বনের হাতিয়ার।
এতে সভাপতিত্ব করেন কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনামিকা নজরুল। এর আগে স্বাগত বক্তব্য দেয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন চন্দ্র বর্মন। এছাড়া পার্টনার গ্রোগ্রাম সিনিয়র মনিটরিং অফিসার মাসুদ আহমেদ বক্তব্য রাখেন। এসময় উপজেলার কৃষক-কৃষাণী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।