শুক্রবার
৬ই জুন, ২০২৫
২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

ছুটি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত হারাতে হবে চাকরী

Fresh News রিপোর্ট
মে ২১, ২০২৫
১০:১৬ অপরাহ্ণ

ছুটি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে সরকারি কর্মচারীদের (কর্মকর্তা-কর্মচারী) চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন কঠোর বিধান রেখে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করা হচ্ছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রশাসনের শৃঙ্খলা ফেরাতে ‘সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ (সংশোধিত), ২০১৮’ এর খসড়া করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এখন এটি উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে রয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় প্রশাসনে। নাজুক পরিস্থিতির সুযোগে দাবি-দাওয়া আদায়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেন সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে দাবি আদায়ের আন্দোলনে সংকটে পড়ে প্রশাসন। ব্যাহত হয় স্বাভাবিক কার্যক্রম।

এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় একটি অংশ এখনো কাজে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে রাতারাতি কোনো সিদ্ধান্তও নেওয়া যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজছিল সরকার। এ প্রেক্ষাপটেই সংশোধন করে আইনে কঠোরতা আনার বিষয়টি সামনে আসে।

এ অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ‘সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ ১৯৭৯’ আদলে ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাদের তৈরি করা অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী মাত্র আটদিনের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। কিন্তু বিভিন্ন পর্যায়ের সমালোচনার মুখে এ বিষয়ে আর এগোয়নি সরকার।

কিন্তু প্রশাসনে শৃঙ্খলা এখনো ফেরেনি। এ পরিস্থিতিতে নতুন করে অধ্যাদেশের খসড়া করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

সরকারি কর্মচারী অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকারি কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন, যার কারণে অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে; অন্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া, নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন; অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন; যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন- তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।

দোষী কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ বা চাকরি হতে অপসারণ চাকরি হতে বরখাস্ত দণ্ড প্রদান করা যাবে বলে খসড়া অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের আইন জারির ফলে কতিপয় কর্মকর্তাদের কাছে কর্মচারীরা দাসে পরিণত হবে। সাংবিধানিক অধিকারের পরিধি ও ব্যাপকতাকে সীমিত করতে পারে-যা চরম উদ্বেগজনক। এটি অপব্যবহারের সুযোগ বেশি থাকবে। নানা অজুহাত ও অভিযোগে নিরীহ কর্মচারীদের চাকরি হারানোর শঙ্কা তৈরি হবে।

এ পরিস্থিতিতে প্রায় ৪৬ বছর পর কর্মচারীদের স্বার্থবিরোধী কালো আইন জারির সব ধরনের তৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ করতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে।