ঈদুল আজহার ১০ দিনের ছুটিতে ব্যাংক লেনদেন বন্ধ থাকায় নগদ টাকার জন্য গ্রাহকদের একমাত্র ভরসা এটিএম বুথ হলেও অধিকাংশ বুথেই টাকা না থাকায় পড়তে হচ্ছে তীব্র ভোগান্তিতে।
৫ জুন থেকে শুরু হওয়া টানা ছুটির মধ্যেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক এটিএম বুথ ঘুরেও কাঙ্ক্ষিত টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। বংশালের বাসিন্দা রহমান জানান, হাসপাতালের জরুরি কাজে টাকা তোলার চেষ্টা করেও পাঁচটি বুথে ঘুরে ব্যর্থ হন তিনি। শেষ পর্যন্ত বন্ধুর সাহায্যে টাকা জোগাড় করতে বাধ্য হন।
ধানমণ্ডির একটি পোশাক কারখানার কর্মী রুনা আক্তার একই ধরনের অভিজ্ঞতা জানান। বোনকে টাকা পাঠানোর জন্য চেষ্টা করেও কাছাকাছি কোনো বুথ থেকে টাকা না পেয়ে মিরপুর গিয়ে তুলতে হয়েছে। এতে সময়, শ্রম এবং বাড়তি খরচ – সবই বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ঈদের ছুটি শুরুর আগেই নির্দেশ দিয়েছিল, যেন প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক তাদের এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহ করে এবং সার্বক্ষণিক রিফিল ব্যবস্থা রাখে। কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। বেশিরভাগ বুথে ‘নো ক্যাশ’ বা ‘আউট অব সার্ভিস’ সাইন টাঙানো দেখা যাচ্ছে।
বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, শাখা সংলগ্ন বুথগুলো পরিচালিত হয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে। ছুটির কারণে সেসব শাখা বন্ধ থাকায় নতুন করে টাকা ভরার সুযোগ হয়নি। যদিও কিছু ব্যাংক আলাদা টিম দিয়ে রিফিলের ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
কিছু এটিএমে ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন থাকলেও তা থেকেও কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলছে না। কারণ, একজন টাকা জমা দিলে সাথে সাথে অন্য কেউ তা তুলে নিচ্ছেন। ফলে নতুন কোনো অর্থ না আসায় টাকার ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, তারা আগেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন যথাযথভাবে বুথে টাকা সরবরাহ নিশ্চিত করতে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে অনেক ব্যাংক তা মানছে না বলেই গ্রাহকদের দুর্ভোগ বাড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রতিটি বুথে সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং জরুরি ভিত্তিতে টাকা রিফিলের টিম গঠনের মাধ্যমেই কেবল এমন সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।