ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও খেলাপি ঋণ বিষয়ে সঠিক তথ্য আর্থিক নিরীক্ষায় প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। তারা বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও আদালতের রায় মানতে গিয়ে নিরীক্ষকদের হাত-পা বাঁধা ছিল।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন আইসিএবির কাউন্সিল সদস্য মেহেদি হাসান। তিনি জানান, কোন ঋণকে খেলাপি ধরা হবে, সেটি নির্ধারণ করতো বাংলাদেশ ব্যাংক, এবং সেই নির্দেশনা অনুযায়ী নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করতে বাধ্য ছিলেন তারা।
তিনি বলেন, অনেক সময় অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে ব্যক্তিগত ব্যর্থতা তুলে ধরা হলেও তা প্রকাশ্য আর্থিক প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। কারণ, নিয়মনীতি এবং আদালতের নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ ছিল না। এমনকি অনেক ঋণগ্রহীতা আদালতের মাধ্যমে খেলাপি না হওয়ার রায় পাওয়ায়, সেই ঋণকেও খেলাপি দেখাতে পারেননি নিরীক্ষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিএবির সভাপতি মারিয়া হাওলাদার, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিন, কাউন্সিল সদস্য শাহাদাত হোসেন, মনিরুজ্জামান, সাব্বির আহমেদ ও জেরিন মাহমুদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা একমত হন যে, নিরীক্ষা রিপোর্টে সব তথ্য প্রকাশ করতে না পারার দায় নিরীক্ষকদের একার নয়, বরং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা ও চাপমুক্ত পরিবেশের অভাবও দায়ী।
অন্যদিকে আইসিএমএবি সিএমএ সদস্যদের অডিট ক্ষমতা দেওয়ার দাবি তুলেছে। তাদের মতে, কস্ট অডিটের পাশাপাশি একক মালিকানা, ট্রাস্ট, এনজিওসহ আরও অনেক খাতে নিরীক্ষা করার অধিকার তাদের দেওয়া প্রয়োজন। তবে আইসিএবি এই দাবির বিরোধিতা করে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে কেবল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের মাধ্যমেই নিরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্ভব।
আইসিএবি আরও জানায়, তারা আর্থিক নিরীক্ষার গুণগত মান বজায় রাখতে একটি শক্তিশালী গঠন কাঠামো পরিচালনা করছে, যার মধ্যে রয়েছে কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স বিভাগ, তদন্ত কমিটি ও শৃঙ্খলা পর্ষদ।
সংগঠনটি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, দেশের স্বার্থে অপপ্রচার বন্ধ করে সম্মিলিতভাবে অর্থনৈতিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।