রবিবার
৩রা আগস্ট, ২০২৫
১৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

রেমিট্যান্স ও রিজার্ভে রেকর্ড অর্জন নিয়ে নতুন অর্থবছর শুরু

Fresh News রিপোর্ট
জুলাই ২, ২০২৫
৯:২২ পূর্বাহ্ণ

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অভূতপূর্ব অর্জন করেছে বাংলাদেশ, যা নতুন ২০২৫–২৬ অর্থবছরের শুরুতে অর্থনীতিতে স্বস্তি ও স্থিতিশীলতার বার্তা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি এবং দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ।

অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগপৎ নীতিগত পদক্ষেপের ফলে প্রবাসীরা বৈধ পথে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। হুন্ডির পরিবর্তে ব্যাংক চ্যানেলে টাকা আসায় বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে চাপ কমেছে এবং রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৪–২৫ অর্থবছর শেষে মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগের অর্থবছর শেষে রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের বিপিএম–৬ পদ্ধতিতে হিসাব করলে এই রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬৬ বিলিয়নে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বেশি।

এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথমবারের মতো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের পরিমাণও প্রকাশ করেছে। ২৯ জুন পর্যন্ত নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) ছিল ২০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার এবং অর্থবছর শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়নে। এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ভালো অবস্থান বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি আইএমএফ, এডিবি ও জাইকার বাজেট সহায়তা হিসেবেও উল্লেখযোগ্য অর্থ এসেছে। ২৬ জুন এসব আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থ বাংলাদেশের রিজার্ভে যুক্ত হয়।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সহায়তা, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলেই বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বেড়েছে। নতুন অর্থবছরে রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়, যেখানে রপ্তানি, আমদানি ও রেমিট্যান্সে যথাক্রমে ১০, ৮ ও ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করা হয়েছে।

বিশ্বের অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যেও রেমিট্যান্স ও রিজার্ভে এমন ইতিবাচক অর্জন দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় নতুন গতি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।