ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন ৩০০ জনেরও বেশি সাধারণ মানুষ। এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছেন আরও শত শত ফিলিস্তিনি।
গাজার গণমাধ্যম দপ্তর জানায়, গত দুই দিনে ইসরায়েল অন্তত ২৬টি ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল আশ্রয়কেন্দ্র, ঘরবাড়ি, বাজার ও খাদ্য সংগ্রহে থাকা বেসামরিক নাগরিকরা। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৫৮১ জন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে প্রাণ হারান ৭৩ জন, যাদের অনেকেই ছিলেন গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে।
এছাড়া দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি তাঁবুতে হামলায় মারা যান ১৩ জন এবং গাজা শহরের পশ্চিমে মুস্তাফা হাফেজ স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত মানুষের ওপর হামলায় প্রাণ হারান আরও ১৬ জন। এসব হামলায় নারী, শিশু ও অসহায় মানুষই মূলত শিকার হয়েছেন।
আহমেদ মনসুর নামের এক বেঁচে ফেরা ব্যক্তি জানান, ভোরে ঘুম ভেঙে যায় বোমার শব্দে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় মনে হয়েছিল ভূমিকম্প হচ্ছে। চারপাশে আগুন ধরে যায়, কেউ কারও সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারেনি।
গাজার সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েল এসব হামলা চালিয়েছে পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক মানুষের ওপর, যাদের অনেকেই শুধু একটু খাবারের আশায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম জানান, মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও হঠাৎ গুলির ঝড়ে সব এলোমেলো হয়ে যায়। কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই চালানো হয় হামলা। আহতদের উদ্ধারে ইমার্জেন্সি টিমও পৌঁছাতে পারছে না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা এপি জানায়, গাজায় খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মার্কিন ঠিকাদাররা ভিড় সামাল দিতে ব্যবহার করছে তাজা গুলি ও স্টান গ্রেনেড। অভিযোগে বলা হয়, এসব নিরাপত্তাকর্মীরা অযোগ্য, অপরিচিত এবং জবাবদিহিতা ছাড়াই অস্ত্র বহন করছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জিএইচএফ জানায়, অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্ত শুরু হয়েছে এবং সাক্ষ্য ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় এপির রিপোর্টকে ভিত্তিহীন প্রমাণিত করা হয়েছে।