ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বিমান ও ড্রোন হামলায় একদিনেই কমপক্ষে ৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেক মানুষ। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু এবং একাধিক পরিবারের সদস্য রয়েছেন।
রোববার (৬ জুলাই) ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন স্থানে একের পর এক হামলা চালায়। গাজার শেখ রাদওয়ান ও আল-নাসর এলাকায় দুটি বাড়িতে বোমা বর্ষণের সময় বহু মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন। সেখানে অন্তত ২৫ জন নিহত হন। ওই ভবনগুলোতে বাস্তুচ্যুত পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল।
ওয়াদি গাজার দক্ষিণে এক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে গোলাবর্ষণে নিহত হন ৪ জন এবং আহত হন ২৫ জন। একই দিন গাজা শহর ও মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে চালানো হামলায় আরও ৬ জন প্রাণ হারান।
উত্তর গাজার আল-সাফতাওয়ি এলাকায় এক বেসামরিক গাড়িতে ড্রোন হামলায় তিন ভাই মারা যান। শেখ রাদওয়ানে আশ্রয়কেন্দ্রে তাঁবুর ওপর ড্রোন হামলায় নিহত হন আরও ৩ জন। গাজার পশ্চিমে শাতি শরণার্থী শিবিরের একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষের ওপর বিমান হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ৭ জন, যাদের মধ্যে শিশুও ছিল।
খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় দুটি অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে এক গর্ভবতী নারীও রয়েছেন। আল-আলবানী মসজিদের কাছে ড্রোন হামলায় উদ্ধার হয় ৪টি মরদেহ, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু।
গাজার আল-তুফাহ ও আল-দারাজ এলাকায় আবাসিক ভবনে চালানো বোমা হামলায় আরও প্রাণহানি ঘটে। নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি পরিবারের ৮ সদস্য ও পৃথক আরেক হামলায় আরও ৩ জন নিহত হন।
এই সব হামলার সময় অধিকাংশ মানুষ ত্রাণ সংগ্রহ বা আশ্রয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরার প্রতিবেদকরা। ইসরায়েলি অবরোধে গাজায় বর্তমানে চরম খাদ্য ও পানি সংকট চলছে।
অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলাও চলমান রয়েছে।