রবিবার
৩রা আগস্ট, ২০২৫
১৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, কমিশন গঠনে একমত দলগুলো

Fresh News রিপোর্ট
জুলাই ২৭, ২০২৫
৭:১৭ অপরাহ্ণ

এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন – এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দল। একইসঙ্গে একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছেছেন দলগুলোর নেতারা।

রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৯তম দিনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। এদিন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি সহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলীয় জোটকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

আলী রীয়াজ জানান, সংলাপে নেতারা একমত হয়েছেন যে, ভবিষ্যতে সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসীমা ১০ বছর নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এটি তাদের প্রস্তাব এবং এর ভিত্তিতেই বিষয়টি ঘোষণা করা যেতে পারে। তিনি আরও জানান, কমিশন বা সংবিধানে অন্য কোনো বিধান যুক্ত হলে তাদের পূর্বের শর্ত বহাল থাকবে।

আলোচনার শুরুতে পুলিশ বিভাগের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে ‘স্বাধীন পুলিশ কমিশন’ গঠনের প্রস্তাব দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা শেষে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে সম্মত হয়। তবে কমিশন গঠনের আইনি কাঠামো নিয়ে ভবিষ্যতে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

আলী রীয়াজ জানান, কমিশন গঠনে সব দল একমত। এটি পুলিশের জবাবদিহিতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করবে এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির কার্যকর একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, ‘বাংলাদেশ পুলিশ কমিশন’ গঠিত হবে একজন অবসরপ্রাপ্ত আপিল বিভাগের বিচারপতির নেতৃত্বে, যিনি ৭২ বছরের নিচে হবেন। সদস্য সচিব হবেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা। কমিশনে সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিনিধি, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী এবং অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা থাকবেন।

কমিশনের অন্তত দুইজন সদস্য নারী হবেন এবং কিছু সদস্য নির্বাচন করতে একটি পৃথক বাছাই কমিটি গঠনের প্রস্তাবও রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও একজন বিচারকের অংশগ্রহণে এই বাছাই কমিটি গঠিত হবে।

চেয়ারপারসন ও সদস্য সচিব পূর্ণকালীন দায়িত্ব পালন করলেও বাকি সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন। বৈঠক ও দাপ্তরিক কাজে অংশগ্রহণের জন্য তারা আইন অনুযায়ী সম্মানী গ্রহণ করতে পারবেন। কমিশনের সদস্যদের দায়িত্ব, ক্ষমতা, অপসারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি একটি আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

সব মিলিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ এবং পুলিশ কমিশনের স্বাধীন কাঠামো নিয়ে যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, তা ভবিষ্যতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকদের মত।