যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর পরিচালক ক্রিস্টোফার রে, যিনি ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বারা মনোনীত হয়েছিলেন, ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি আগামী জানুয়ারিতে দায়িত্বগ্রহণের আগেই পদত্যাগ করবেন। এর মাধ্যমে, রে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের অধীনে তার দায়িত্বের অবসান ঘটাতে চলেছেন।
ক্রিস্টোফার রে-র পদত্যাগের কারণ
বিবিসি জানায়, বুধবার (১২ ডিসেম্বর) এফবিআই-এর অভ্যন্তরীণ এক সভায় রে এই পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, ব্যুরোর জন্য সবচেয়ে সঠিক পদক্ষেপ হলো জানুয়ারিতে বর্তমান প্রশাসনের শেষ পর্যন্ত কাজ করা এবং তারপরে পদত্যাগ করা। এটি ব্যুরোর জন্য এবং দেশটির জন্য সবচেয়ে ভালো হবে।” এ সময় তিনি আরও উল্লেখ করেন, নিজের পদত্যাগের মাধ্যমে তিনি এফবিআইকে আরও হাঙ্গামার মধ্যে টেনে না নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নতুন এফবিআই প্রধান কাশ প্যাটেল
ক্রিস্টোফার রে-র পদত্যাগের ঘোষণা আসার পর, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনে এফবিআই প্রধান হিসেবে কাশ প্যাটেলকে মনোনীত করার কথা ঘোষণা করেছেন। কাশ প্যাটেল, ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান, ট্রাম্পের বিশ্বস্ত সহযোগীদের মধ্যে একজন। তিনি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্যাটেল এফবিআই প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন এবং আসন্ন জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এই পদে যোগ দেবেন।
ক্রিস্টোফার রে ও ট্রাম্পের সম্পর্ক
ক্রিস্টোফার রে-র নির্বাচিত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বহু বিতর্ক ও চাপের মুখে পড়েন। বিশেষ করে, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এফবিআই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে রিপাবলিকানদের কাছ থেকে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। সেই সময়েই ট্রাম্প তাকে বরখাস্ত করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তবে রে তার পদে অব্যাহত থাকেন।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ এবং প্রশাসন গঠন
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন এবং আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তিনি তার প্রশাসনের নতুন সদস্যদের মনোনয়ন দিতে শুরু করেছেন, যাতে তিনি শপথ নেওয়ার আগেই নতুন প্রশাসন সাজাতে পারেন। তার প্রথম মেয়াদে বিশ্বস্ত সহযোগী কাশ প্যাটেলকে এফবিআই প্রধান হিসেবে মনোনীত করা তার প্রশাসনিক কৌশলের একটি অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
নির্বাচনের পর প্রশাসনিক পরিবর্তন
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য নতুন প্রশাসন গঠন একটি বড় দায়িত্ব। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর, ট্রাম্প প্রায় ৪,০০০ নতুন পদে নিয়োগ দেবেন, যার মধ্যে মন্ত্রিসভা ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম ঘোষণা করা হবে।
ক্রিস্টোফার রে-র পদত্যাগ এবং কাশ প্যাটেলের মনোনয়ন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনে দিয়েছে এবং এই পরিবর্তন আগামী কয়েক বছরে দেশটির নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।