বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে আজ রাতে মিশর যাচ্ছেন। রাত ১টায় ঢাকা ত্যাগ করে তিনি কায়রোর উদ্দেশে রওনা দেবেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে একটি ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। এই ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে অংশ নেবেন বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতারা
উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশের সরকার প্রধান অংশগ্রহণ করবেন। সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, পাকিস্তান, মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী এবং নাইজেরিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রতিনিধিত্ব করবেন।
সম্মেলনের প্রতিপাদ্য: যুব ও এসএমইদের জন্য নতুন সুযোগ
ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হলো “Investing in Youth and Supporting Small Medium Enterprises, Shaping Tomorrow’s Economy” (যুব শক্তিতে বিনিয়োগ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সমর্থন, আগামী অর্থনীতির কাঠামো গঠন)। ড. ইউনূসের মতে, এই সম্মেলন বাংলাদেশসহ ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে দেশের তরুণদের ভবিষ্যত উন্নয়ন এবং এসএমই খাতের প্রসারের জন্য। তিনি আশা করছেন, সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে (এসএমই) কীভাবে উন্নত হতে পারে, সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ডি-৮ এর প্রতিষ্ঠা ও সদস্য দেশসমূহ
ডি-৮ (Developing-8) বা ডেভেলপিং-৮ অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থাটি বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্কের মধ্যে পারস্পরিক উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদার করার উদ্দেশ্যে কাজ করে।
সম্মেলনে ড. ইউনূসের সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের তরুণদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব
ড. ইউনূস এই সম্মেলনে বাংলাদেশের তরুণদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবেন। যুবকদের উন্নয়ন এবং তাদের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির ধারায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি সম্মেলনে উঠে আসবে, যা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের সুযোগ হতে পারে।
এছাড়া, সম্মেলনে ছোট ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের প্রসার এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নানা দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে, যা বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে লাভজনক হতে পারে।
এভাবে, এই সম্মেলন বাংলাদেশের তরুণদের জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা হতে পারে, যেখানে তারা গ্লোবাল অর্থনীতির অংশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে।