বৃহস্পতিবার
২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫
৯ই মাঘ, ১৪৩১

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

তওবা: পাপ থেকে মুক্তি ও আত্মশুদ্ধির পথ

Fresh News রিপোর্ট
জানুয়ারি ২১, ২০২৫
১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ

মানুষ স্বভাবতই ভুল ও পদস্খলনের শিকার হয়। গুনাহ ও পাপ মানুষের স্বভাবগত বিষয়। তবে, যারা তওবার মাধ্যমে নিজেদের ভুল বুঝে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে পাপ থেকে বিরত থাকার দৃঢ় সংকল্প করেন, তারাই প্রকৃত সফল। রাসুল (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেক আদম সন্তান গুনাহগার। আর গুনাহগারদের মধ্যে তওবাকারীরা উত্তম” (ইবনে মাজাহ : ৪২৫১)। তওবার মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন, যা মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের তওবার মাধ্যমে পাপমুক্ত হওয়ার পথ দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, “হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো, খাঁটি তওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নহরগুলো প্রবাহিত।” (সুরা তাহরিম : ৮)। রাসুল (সা.) বলেছেন, “গুনাহ থেকে তওবাকারী নিষ্পাপ ব্যক্তিতুল্য।” (ইবনে মাজাহ : ৪২৫০)।

তওবা আসলে কী এবং কীভাবে করতে হবে, তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তওবা মানে কৃত পাপের প্রতি অনুতপ্ত হওয়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। রাসুল (সা.)-এর একটি হাদিসে বলা হয়েছে, “অনুতপ্ত হওয়াই তওবা” (ইবনে মাজাহ : ৪২৫২)। ইসলামের পরিভাষায়, তওবা হলো আল্লাহর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে শরিয়তবহির্ভূত নিষিদ্ধ কাজ পরিহার করা, ভবিষ্যতে পাপ থেকে বিরত থাকার দৃঢ় সংকল্প করা এবং আল্লাহর কাছে ফিরে আসা। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, “হে মুমিনরা! তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তওবা করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো” (সুরা নুর : ৩১)।

তওবা করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্ত রয়েছে। যেমন: ১. কৃত পাপের প্রতি অনুতপ্ত হওয়া এবং সেই কাজকে প্রচণ্ডভাবে ঘৃণা করা। ২. পাপকাজ সম্পূর্ণ পরিহার করা। ৩. ভবিষ্যতে পাপ কাজ না করার দৃঢ় সংকল্প করা। ৪. যদি অন্যের হক নষ্ট করা হয়ে থাকে, তবে তার হক আদায় করা এবং ক্ষমা চাওয়া। ৫. আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তওবা করা, পার্থিব উদ্দেশ্যে নয়।

এছাড়া, পাপ ও গুনাহের জন্য আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তওবার পর, ভালো ও সততাপূর্ণ কাজ করার মাধ্যমে পরিশুদ্ধ ঈমানদার হিসেবে আল্লাহর কাছে ফিরে আসা যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি গুনাহ করার পর উত্তমরূপে ওজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন” (ইবনে মাজাহ : ১৩৯৫)। তবে, অন্যের হক নষ্ট করার ক্ষেত্রে, তার হক আদায় না করলে তওবা কবুল হবে না।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে খাঁটি তওবা করার তাওফিক দান করুন, যেন আমরা পরিশুদ্ধ ঈমানদার হিসেবে আল্লাহর দরবারে হাজির হতে পারি।