অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে চট্টগ্রামের উন্নয়ন-সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
চসিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈঠকে চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন প্রকল্প গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন মেয়র। তিনি জানান, সিডিএ ৩৬টি খালে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও আরও ২১টি খাল এর বাইরে রয়েছে, যা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। নদী, খাল ও নালা সচল রাখতে দখল ও দূষণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা হয়।
এছাড়া, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১ শতাংশ মাশুল আদায়ের বিষয়েও আলোচনা করেন মেয়র। তিনি বলেন, এই রাজস্বের একটি অংশ চট্টগ্রামের রাস্তা, অবকাঠামো এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ব্যবহার করা হলে নগরীর পরিষেবা আরও উন্নত হবে।
বৈঠকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করে মেয়র জানান, উন্নত দেশগুলোর মতো বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরের উদ্যোগ নিলে তা পরিবেশবান্ধব হওয়ার পাশাপাশি নগর অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি চট্টগ্রামে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দেন এবং ওয়েস্ট প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
মেয়র তার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, তিনি চট্টগ্রামকে “গ্রিন, ক্লিন, হেলদি সিটি” হিসেবে গড়ে তুলতে চান। এ জন্য পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো, বনায়ন এবং পরিচ্ছন্ন নগর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। নগরীতে নতুন পার্ক ও উন্মুক্ত স্থান তৈরির উদ্যোগ এবং স্বাস্থ্যসম্মত ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
বৈঠকে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অর্থ ছাড়ের বিষয়েও আলোচনা হয়। মেয়র প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন, যাতে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের অর্থ অনুমোদন হয় এবং উন্নয়ন কার্যক্রম আরও গতি পায়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস মেয়রের পরিকল্পনাগুলো ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। মেয়র বলেন, নগরবাসীর স্বার্থে প্রতিটি উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চসিক অঙ্গীকারবদ্ধ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় চট্টগ্রামকে আধুনিক, বাসযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব নগরীতে পরিণত করতে চান।