ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিতর্কিত ওয়াকফ আইন কার্যকরে সাময়িক বিরতি দিয়েছে। দেশটির সুপ্রিম কোর্টে এই আইনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একাধিক পিটিশনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ওয়াকফ নিয়োগ বা বোর্ডের দাবি সংশোধনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
এই আইনের আওতায় ওয়াকফ বোর্ড ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ নামে একটি ধারা ব্যবহার করে কাগজপত্র ছাড়াই যেসব সম্পত্তি মুসলিমদের দ্বারা ধর্মীয় বা দাতব্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, তা নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করতে পারে।
সম্প্রতি দেশটির সংসদে পাস হওয়া এই আইন ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হন। আইনটির মূল আপত্তির জায়গা হচ্ছে, এটি অনুযায়ী এখন থেকে ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমরাও সদস্য হতে পারবেন।
সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে হাজির হন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি আদালতকে জানান, সাত দিনের মধ্যে তারা আইনটির ৯ ও ১৪ ধারার জবাব দেবে এবং এর মধ্যে কোনো ওয়াকফ নিয়োগ বা পরিবর্তন করা হবে না।
উল্লেখ্য, আইনটির এই ধারাগুলো কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ডে সর্বোচ্চ ৮ জন মুসলিম এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে সর্বোচ্চ ৪ জন মুসলিম সদস্য রাখার বিধান দেয়— যা আগের সদস্যসংখ্যার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না সরকারকে প্রশ্ন করেন, “যদি ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের জায়গা দেওয়া হয়, তবে হিন্দু এন্ডোমেন্ট বোর্ডেও কি মুসলিমদের জায়গা দেওয়া হবে?”
আদালত আরও জানায়, ওয়াকফ সংক্রান্ত বহু পিটিশন জমা পড়েছে, তবে আপাতত চার থেকে পাঁচটি বাছাইকৃত আবেদন নিয়েই আদালত রায় দেবে। বিতর্কিত এই আইনকে কেন্দ্র করে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।