সোমবার
৪ঠা আগস্ট, ২০২৫
২০শে শ্রাবণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

গণমাধ্যম স্বাধীনতা নিয়ে বিদেশি নিবন্ধের প্রতিবাদ জানালো অন্তর্বর্তী সরকার

Fresh News রিপোর্ট
জুন ২৩, ২০২৫
৯:৪১ পূর্বাহ্ণ

কমনওয়েলথ জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত মতামতের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ২০ জুন প্রকাশিত ওই নিবন্ধে ‘দ্য ট্রুথ উইল আউট: হাউ প্রেস ফ্রিডম ইজ সাপ্রেস্ড ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকট নিয়ে মন্তব্য করেন সিজেএ-র নির্বাহী কমিটির সদস্য উইলিয়াম হরসলি।

সরকারি প্রতিবাদপত্রটি রোববার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, নিবন্ধে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফর এবং সরকারের ভূমিকা নিয়ে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা বাস্তবতা বিকৃত করেছে এবং এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার অবমূল্যায়ন ঘটিয়েছে।

প্রতিবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়, গণবিক্ষোভ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষাপটে সাবেক সরকারের পতনের পর, জনগণের দাবির ভিত্তিতে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নয়, বরং নৈতিক কর্তৃত্ব ও সংস্কারের জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিন দফা এজেন্ডা ঘোষণা করেন: স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, গুরুতর অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা এবং গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন। সরকার জানায়, এটি ক্ষমতা দখলের প্রয়াস নয় বরং জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ।

সরকার স্বীকার করেছে যে, দেশে বিচারাধীন বহু মামলা রয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে। তবে এগুলো এখন আর আগের মতো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে পরিচালিত হচ্ছে না। পুলিশ ও প্রসিকিউশনকে নিরপেক্ষ ও প্রমাণভিত্তিক প্রক্রিয়ায় কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবাদপত্রে জানানো হয়, সরকার ইতোমধ্যে ১৬ হাজারেরও বেশি ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এসব মামলা ছিল রাজনৈতিক প্রতিশোধের ফল এবং এগুলো বাতিল করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ না করে তাদের সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য পৃথক কমিশন গঠন করে কাজ শুরু হয়েছে। তাদের লক্ষ্য হলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা এবং জাতীয় পুনর্মিলন এগিয়ে নেওয়া।

সরকারের ভাষ্যে বলা হয়েছে, অতীতের দমন-পীড়নের কাঠামো ভেঙে একটি মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক ও অংশগ্রহণমুখী ব্যবস্থার দিকে দেশ এগোচ্ছে। এই রূপান্তর সহজ নয়, তবে অন্তর্বর্তী সরকার এই পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।