নতুন বছরে পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বেড়েছে, এবং পৌষ মাসে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছে। এ কারণে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে উত্তরের হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়। চলতি শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশা এবং শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবের কারণে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এ জেলায়।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় তা ৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। এর আগের দিন ২ জানুয়ারি সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ছিল ১১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ১৮ ডিসেম্বর পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর থেকে টানা ছয় দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছিল এই অঞ্চলে।
এদিকে, গত কয়েক দিনের মতো শুক্রবারও ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে পঞ্চগড়ের প্রান্তিক এলাকা। কুয়াশার কারণে সড়কগুলোতে বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে। হিমেল বাতাসের সঙ্গে ঝরছে হিম শিশির, যা মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলেছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য শীতের তীব্রতা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, তাপমাত্রার তুলনায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে হিমশীতল বাতাস। ঘন কুয়াশার কারণে বাতাস যেন কাঁটার মতো বিঁধছে। বাড়ির ভিতরে সবাই লেপ-কাঁথা দিয়ে নিজেকে উষ্ণ রাখার চেষ্টা করছেন। নিম্নআয়ের মানুষের জন্য শীতের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
দিনমজুর হোসেন আলী ও আলাউদ্দিন জানান, কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে শীত এখন অনেক বেশি অনুভূত হচ্ছে। গরম কাপড়ের অভাবে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না, এবং সরকারি কিংবা বেসরকারি কম্বলও তারা পাননি।
পাথর শ্রমিক জুয়েলসহ অন্য শ্রমিকরা জানান, ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ও শিশির ঝরছে, আর ঠান্ডা বাতাস বইছে। তবুও পাথর তুলতে নদীতে যেতে হয়, কিন্তু এই অবস্থায় তাদের কাজে খুব অসুবিধা হচ্ছে। কাজ শেষে তারা জ্বর ও সর্দি-কাশির সমস্যায় ভুগছেন।
শীতের কারণে শীতজনিত রোগব্যাধি বেড়ে গেছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই নতুন রোগী আসছে, যারা জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও অন্যান্য শীতজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ ঢাকা পোস্টকে জানান, শুক্রবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ছয় দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় পঞ্চগড়ে।