মঙ্গলবার
২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

চার প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার সুপারিশ

Fresh News রিপোর্ট
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
৭:২৯ অপরাহ্ণ

দেশের পুরাতন চারটি বিভাগের সীমানা অনুসারে চারটি প্রদেশ গঠন করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ কমানো ও প্রশাসনিক কার্যকারিতা বাড়াতে এই প্রস্তাব করা হয়েছে।

কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য যথেষ্ট কার্যকর নয়। এককেন্দ্রিক ব্যবস্থার কারণে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে অতিরিক্ত কাজের চাপ তৈরি হচ্ছে। তাই ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে চারটি প্রদেশ গঠন করা হলে তা দেশের সুশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

এছাড়া, দিল্লির আদলে ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে, যা নির্বাচিত আইনসভা ও স্থানীয় সরকার কাঠামোর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। ঢাকা মহানগরী, টঙ্গি, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও নারায়ণগঞ্জকে এই কাঠামোর আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

জেলা পরিষদ বাতিল ও স্থানীয় সরকার সংস্কার

প্রতিবেদনে জেলা পরিষদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে, কারণ এটি কখনোই সরাসরি নির্বাচিত হয়নি এবং অধিকাংশ পরিষদ আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। এর পরিবর্তে জেলা পরিষদের সম্পদ সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক সরকারের অধীনে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

পৌরসভাকে শক্তিশালী করতে পৌরসভার চেয়ারম্যানকে ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে নির্বাচিত করার প্রস্তাব এসেছে, যাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা আরও কার্যকর হয়।

উপজেলা পরিষদের ক্ষমতা বাড়াতে ভাইস চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশকে আবর্তন পদ্ধতিতে উপজেলা পরিষদের সদস্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ক্ষমতা সীমিত করে তাকে শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও পরীক্ষার দায়িত্বে রাখার কথা বলা হয়েছে, যাতে তিনি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকেন।

ভূমি ব্যবস্থাপনায় সংস্কার

ভূমি ব্যবস্থাপনাকে কার্যকর করতে উপজেলা পর্যায়ে নতুন পদ সৃষ্টির সুপারিশ করা হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত কানুনগোদের পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (ভূমি) করা এবং এর জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের কাঠামোগত পরিবর্তন

ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সংখ্যা ৯ থেকে ১১ করার সুপারিশ এসেছে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে দুইজন সদস্য নির্বাচিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যার একজন অবশ্যই নারী হবেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে, যাতে তিনি একক ক্ষমতাবান হয়ে উঠতে না পারেন।

বুধবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়। কমিশনের প্রধানরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই প্রতিবেদন জমা দেন।