আত্মবিশ্বাস ছিল আকাশচুম্বী, মাঠে নামার আগে কথার লড়াইয়েও পিছিয়ে ছিল না ব্রাজিল। কিন্তু এস্তাদিও মনুমেন্তালের ঘরের মাঠে ফুটবলীয় লড়াইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের যেন ছেলেখেলাই বানিয়ে ফেলল আর্জেন্টিনা। কনমেবল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ১৪তম রাউন্ডে ৪-১ গোলের দাপুটে জয়ে ব্রাজিলকে ইতিহাসের অন্যতম বড় লজ্জা উপহার দিল বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেছেন হুলিয়ান আলভারেজ, এনজো ফার্নান্দেজ, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার ও গুইলিয়ানো সিমিওনে। অন্যদিকে, ব্রাজিলের পক্ষে একমাত্র সান্ত্বনাসূচক গোলটি আসে দ্বিতীয়ার্ধে।
বিশ্বকাপজয়ী একাদশকেই এদিন মাঠে নামিয়েছিল আর্জেন্টিনা। কেবল লিওনেল মেসির জায়গায় ছিলেন থিয়াগো আলমাদা। সেই পরীক্ষিত একাদশই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল শুরু থেকেই। প্রথমার্ধেই ব্রাজিলের জালে তিন গোল দিয়ে একপ্রকার ম্যাচ শেষ করে ফেলে স্কালোনির দল।
এই ম্যাচটি ব্রাজিলের ইতিহাসে একাধিক বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এর আগে কখনও তারা এক ম্যাচে ৪ গোল হজম করেনি। সর্বশেষ ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে ৭-১ ব্যবধানে হারের পর এবারই প্রথম এত বড় ব্যবধানে হার দেখল সেলেসাওরা।
আর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪ গোল হজম করতে হয়েছিল সর্বশেষ ২০১২ সালের এক প্রীতি ম্যাচে, যেখানে মেসির হ্যাটট্রিকে ৪-৩ গোলে জয় পায় আলবিসেলেস্তেরা। এবার সেই লজ্জাকে আরও বড় করে তুলল স্কোরলাইন, যার মধ্যে কোনো জবাব ছিল না ব্রাজিলের।
গত নভেম্বরে নিজেদের ঘরের মাঠে ওতামেন্ডির হেডে আর্জেন্টিনার কাছে হেরেছিল ব্রাজিল। এবার সেই পরাজয়ের রেশ যেন আরও গাঢ় করে দিল এই বড় হারে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ইতিহাসে নিজেদের মাঠে অপরাজেয় থাকার গর্ব ইতোমধ্যেই হারিয়েছে ব্রাজিল, এবার যোগ হলো সবচেয়ে বেশি গোল হজমের লজ্জাও।
মাঠের পারফরম্যান্স আর ফলাফলে স্পষ্ট—আর্জেন্টিনার ফুটবল এখন কেবল প্রতিপক্ষকে হারানোর নয়, ইতিহাসও নতুন করে লিখছে। আর ব্রাজিল? আত্মবিশ্বাস থাকলেই যে জয় পাওয়া যায় না, তারই নির্মম উদাহরণ হয়ে থাকল এই ম্যাচ।