ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণে রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড। সর্বশেষ হামলায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন শতাধিক। বুধবার (২৬ মার্চ) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজার ২০০ জনে। শুধু গত কয়েকদিনেই নিহত হয়েছেন ৮৩০ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৮০০ মানুষ। বুধবারের হামলায় নতুন করে আহত হয়েছেন আরও ১২৪ জন। এ নিয়ে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮২৮ জনে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন। রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহের কাছেও পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধারকারীরা। সংকট এতটাই ভয়াবহ যে, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া মানুষগুলোকে বের করে আনার মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও আর হাতে নেই।
গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল নতুন করে বিমান হামলা শুরু করে গাজা উপত্যকায়। এই হামলা কার্যত ভেঙে দিয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির চুক্তি। স্পষ্টতই, আন্তর্জাতিক চাপ ও মানবিক আহ্বানকে অগ্রাহ্য করেই চালানো হচ্ছে এই আগ্রাসন।
এর আগে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলায় ইসরায়েলকে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও মুখোমুখি হতে হয়েছে।
নিহতের সংখ্যা যেমন বেড়ে চলছে, তেমনি মানবিক বিপর্যয়ও চরমে পৌঁছেছে গাজায়। খাদ্য, চিকিৎসা, পানি—সবকিছুর তীব্র সংকটে দিন কাটাচ্ছে লাখো ফিলিস্তিনি। এদিকে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরতির দাবি ক্রমেই জোরালো হলেও, বাস্তবতার মাটিতে তা এখনো নিছক একটি আকুতি হয়েই রয়ে গেছে।