অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবিরাম হামলা এবং সর্বাত্মক অবরোধে ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। হামলার পাশাপাশি খাদ্য, চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা বন্ধ করে ইসরায়েল সেখানে সৃষ্টি করেছে চরম মানবিক বিপর্যয়।
সোমবার (৭ এপ্রিল) ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ঘোষণা দিয়েছেন, “গমের একটি দানাও গাজায় ঢুকতে দেওয়া হবে না।” বার্তাসংস্থা আনাদোলু এবং ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহারোনোথ জানায়, অর্থমন্ত্রী স্মোট্রিচ তার এই বক্তব্যে গাজার জন্য খাদ্য সরবরাহে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, গাজায় প্রবেশের সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় অঞ্চলটিতে খাদ্য, ওষুধ এবং জরুরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো বন্ধ হয়ে গেছে। গত ২ মার্চ থেকে এই অবরোধ চলমান রয়েছে।
প্রতিদিনই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। ১৮ মার্চ থেকে আবারও আকাশপথে হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১,৪০০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ৩,৪০০ জন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল এই আগ্রাসন শুরু করলেও আন্তর্জাতিক মহল এখনও কার্যকর কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেনি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজায় আগ্রাসন আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার আলোকে ফিলিস্তিনি জনগণকে গাজা থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগও রয়েছে।
বিশ্বজুড়ে শান্তিপ্রিয় মানুষ গাজার এই মানবিক বিপর্যয়ে ক্ষুব্ধ হলেও ইসরায়েলের নির্লজ্জ ও নিষ্ঠুর অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও গভীর সংকটে ঠেলে দিচ্ছে।