দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল আকস্মিকভাবে দেশজুড়ে সামরিক আইন জারি করেছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন। সামরিক আইন জারির পেছনে তিনি উত্তর কোরিয়াপন্থী শক্তিকে দমন এবং সাংবিধানিক শৃঙ্খলা রক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন।
যদিও উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে সরাসরি কোনো সামরিক হুমকির কথা উল্লেখ করেননি প্রেসিডেন্ট ইউন, তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডকেই সংকটের মূল কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন। তিনি দাবি করেন, বিরোধী দলগুলো সংসদীয় প্রক্রিয়া জিম্মি করে দক্ষিণ কোরিয়াকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা লি জায়ে-মিউং সামরিক আইনকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত বলে অভিহিত করেছেন। এক লাইভস্ট্রিমে তিনি বলেন, “দেশ শাসনে সেনাবাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপ অর্থনীতি এবং নাগরিক অধিকার হুমকির মুখে ফেলবে।”
দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক সংসদ নির্বাচনে বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে, যা প্রেসিডেন্ট ইউনের প্রশাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। বিরোধী দল মন্ত্রিসভার সদস্যদের অভিশংসনের প্রস্তাব তোলে এবং সরকারের বাজেট প্রস্তাব থেকে ৪ ট্রিলিয়ন ওনের বেশি কাটছাঁট করার উদ্যোগ নেয়। প্রেসিডেন্ট ইউন এ উদ্যোগকে সরকারি প্রশাসনের কার্যক্রম ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেন।
সামরিক আইন কার্যকর হওয়ার ফলে:
- সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- গণমাধ্যম ও প্রকাশনা সামরিক নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ সীমিত এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
১৯৮০ সালের পর দক্ষিণ কোরিয়া গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা অনুসরণ করলেও সামরিক আইন জারি দেশটির জনগণের মধ্যে শঙ্কা তৈরি করেছে। প্রেসিডেন্ট ইউনের সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক সংকট এবং রাজনৈতিক বিভাজন আরও বাড়াতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে আন্তর্জাতিক মহল দক্ষিণ কোরিয়ার এই সিদ্ধান্তকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।