ভারতের লোকসভায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) সংসদ সদস্য সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এই প্রস্তাবে তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন চলছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারত সরকারকে জাতিসংঘের মাধ্যমে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের জন্য আবেদন জানাতে হবে।” তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে প্রস্তুত।
এর আগের দিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে প্রতিটি ধর্ম ও বর্ণের মানুষের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষা করা জরুরি।”
লোকসভায় তৃণমূলের প্রস্তাবের পর বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার এই প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলাদেশি হিন্দু হওয়াটা কি অপরাধ?” তিনি আরও বলেন, এই ইস্যুতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, বরং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
তৃণমূল কংগ্রেসের প্রস্তাবটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশভাগের পর বাংলাদেশের সংখ্যালঘু শরণার্থীদের পশ্চিমবঙ্গে আসার ইতিহাসের কথা উল্লেখ করে উত্থাপন করা হয়।
এ ধরনের প্রস্তাবের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এ ধরনের আলোচনা দুই দেশের সম্পর্ক এবং অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের প্রশ্ন উসকে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর মতো প্রস্তাব ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। এটি অভ্যন্তরীণ ইস্যুকে আন্তর্জাতিকীকরণের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে।