ইসলাম সুন্দর চরিত্র গঠনের জন্য নির্দেশনা দেয়, যা একজন মুসলমানের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিফলিত হয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) ছিলেন মোহনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী এবং তিনি তার উম্মতকে সুন্দর জীবন গঠনের শিক্ষা দিয়েছেন। হজরত জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় ও কেয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে যে তোমাদের মধ্যে অধিকতর সুন্দর চরিত্রের অধিকারী।” (তিরমিজি : ২১০৮)।
ইসলামে সত্যবাদিতা, সুন্দর কথা বলা, বিনয়, কোমলতা, কল্যাণ কামনা, অনর্থক বিষয় পরিহার, অতিথিপরায়ণতা, রাগ নিয়ন্ত্রণ এবং ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসার মতো গুণাবলী মানব জীবনের সৌন্দর্য হিসেবে গন্য করা হয়।
সত্যবাদিতা: সত্য বলার মাধ্যমে একজন মানুষ তার জীবন সুন্দর করে তোলে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো।” (সুরা আহজাব : ৭০-৭১)।
সুন্দর কথা বলা: “সূর্য উদিত হওয়া প্রতিটি দিবসেই মানুষের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর সদকা দেওয়া আবশ্যক হয়। সুন্দর কথা বলা সদকা সমতুল্য।” (মুসলিম : ১০০৯)।
বিনয় ও কোমলতা: রাসুল (সা.) বলেন, “আল্লাহ কোমলতাকে পছন্দ করেন। আল্লাহ কোমলতার বদলায় যা দেন, কঠোরতার কারণে তা দেন না।” (বুখারি : ২৫৯৩)।
কল্যাণ কামনা: “একজন মুসলিমের ওপর অন্য মুসলিমের ছয়টি অধিকার আছে,” এর মধ্যে কল্যাণ কামনা অন্যতম। (মুসলিম : ২১৬২)।
অনর্থক বিষয় পরিহার: রাসুল (সা.) বলেছেন, “কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য হলো অনর্থক কাজ পরিহার করা।” (তিরমিজি : ২৩১৮)।
অতিথিপরায়ণতা: “কেউ আল্লাহ ও আখেরাতের ওপর ঈমান আনলে সে যেন অতিথির সমাদর করে।” (বুখারি : ৬০১৮)।
রাগ নিয়ন্ত্রণ: “ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল, আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।” (সুরা আলে ইমরান : ১৩৩-১৩)।
ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসা: “পরস্পরের মধ্যে বিবাদ নিরসন করা। কারণ পরস্পরের মধ্যে থাকা বিবাদই সবকিছু ধ্বংস করে” (তিরমিজি : ২৫০৯)।
এভাবে ইসলাম ব্যক্তির চরিত্রের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে, যা তার সমাজে শান্তি, সমৃদ্ধি ও ভালোবাসা প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে।