বুধবার
৬ই আগস্ট, ২০২৫
২২শে শ্রাবণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

গাজায় একদিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০, ক্ষুধার্তও বাদ যাননি

Fresh News রিপোর্ট
জুন ১১, ২০২৫
৯:৩২ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একদিনের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭০ জন, আহত হয়েছেন আরও দুই শতাধিক। নিহতদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন খাবারের আশায় আসা ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থী।

মঙ্গলবার ভোর থেকে গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় চিকিৎসা কর্মকর্তারা। এদিন গাজার কেন্দ্রীয় অংশে নেতসারিম করিডরের কাছে মানবিক সহায়তা নিতে আসা লোকজনের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এতে প্রাণ হারান অন্তত ২০ জন, যাদের মধ্যে ছিল ১২ বছরের এক শিশু—মোহাম্মদ খলিল আল-আথামনেহ। আহত হন আরও প্রায় ২০০ জন।

এসব ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামে একটি বিতর্কিত সংস্থা, যেটির কার্যক্রম চলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এবং ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায়। তবে ফিলিস্তিনি জনগণ এবং গাজা সরকার এই সংস্থাকে ‘মানব কসাইখানা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

সরকারি বিবৃতিতে গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জিএইচএফ একটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে, যেখানে ত্রাণের প্রলোভনে ক্ষুধার্ত মানুষদের টেনে এনে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত এই ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫০ জনের বেশি এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১,৫০০ জন।

আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম দেইর আল-বালাহ থেকে জানিয়েছেন, এই ত্রাণকেন্দ্রগুলো এখন যেন ধারাবাহিক রক্তপাতের মঞ্চে রূপ নিয়েছে। ড্রোন, ট্যাংক ও স্নাইপার দিয়ে চালানো এই হামলাগুলোকে মানবিক সহায়তা ধ্বংসের পরিকল্পিত প্রচেষ্টা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ইতোমধ্যে জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাদের হিসেবে, মে মাসের শেষ সপ্তাহে ৫ বছরের নিচে অন্তত ২,৭০০ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। জরুরি সহায়তা পুনরায় চালুর আহ্বান জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় কঠোর অবরোধ জারি করেছে। জিএইচএফ ছাড়া অধিকাংশ অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় ত্রাণ সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ফলে লাখো মানুষ আজ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি।