ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। শনিবার (২ ডিসেম্বর) আগরতলায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় ত্রিপুরা বাংলাদেশとの বাণিজ্য স্থগিত করার কথা বিবেচনা করছে।” তবে তিনি জানান, এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
সীমান্ত নিরাপত্তা ও বাণিজ্যের অবস্থা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে ত্রিপুরায় সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মানিক সাহা বলেন, “সীমান্ত সুরক্ষিত রাখাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বিএসএফ ও পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছে।”
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বর্তমানে কয়লা, মাছসহ অন্যান্য পণ্যের আমদানি কম থাকলেও প্লাস্টিক পণ্যের বাণিজ্য চলছে।
বাণিজ্যের বর্তমান চিত্র
ভারতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গত এক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে যেখানে ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৩০.২৪ কোটি রুপি, ২০২৩-২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১৫.৯৮ কোটি রুপিতে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ১২.৩১ কোটি রুপির পণ্য রপ্তানি হলেও বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় ৭০৩.৬৭ কোটি রুপির পণ্য আমদানি হয়েছে। বাংলাদেশ মূলত ত্রিপুরা থেকে ভাঙা পাথর, ভুট্টা, আদা, শুকনো মরিচ ও সবজির বীজ আমদানি করে। অন্যদিকে, ত্রিপুরায় রপ্তানি করা হয় মাছ, সিমেন্ট, খাদ্যপণ্য, পিভিসি পাইপ এবং তুলার বর্জ্যসহ অন্যান্য পণ্য।
সম্পর্কের ভবিষ্যৎ
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে। তবে ভারতের কর্মকর্তারা স্বাভাবিক বাণিজ্য কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার ব্যাপারে আশাবাদী।