প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূতদের আহ্বান জানিয়েছেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করতে। ভারতের ভিসা সীমিত করার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ইউরোপের ভিসা পেতে সমস্যায় পড়ছেন। ফলে ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের হারাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ভিসা অফিস ঢাকায় বা নিকটবর্তী দেশে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা উভয় পক্ষের জন্য উপকারী হবে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২১ জন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইইউ হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও বৈঠকে অংশ নেন।
দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার এই বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিজয়ের মাসে আপনাদের সঙ্গে এমন একটি ফলপ্রসূ আলোচনায় অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম ও অত্যাচারের ঘটনা বন্ধে আপনারা সহযোগিতা করবেন বলে আশা করি।”
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছড়ানো অপতথ্য প্রতিহত করতে ইইউ প্রতিনিধিদের সহযোগিতা চান ড. ইউনূস। তিনি উল্লেখ করেন, “স্বৈরাচারী সরকার দুর্নীতি ও অর্থপাচারের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন উল্লেখ করেন, বুলগেরিয়া ইতোমধ্যে তাদের ভিসা সেন্টার ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করেছে। অন্যান্য দেশগুলোকেও এই পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এবং নতুন নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ইইউ প্রতিনিধিদের অবহিত করেন। তিনি সব রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি গড়ার পরিকল্পনার কথাও জানান।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।
এই বৈঠক ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।