ভারতীয় পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি আবারও তার কঠোর বাণিজ্যিক অবস্থান প্রকাশ করেছেন। ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত শুল্কের প্রসঙ্গ টেনে তিনি দেশটিকে ‘শুল্কের অপব্যবহারকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মারে লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “যদি ভারত আমাদের পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তবে আমরাও একই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করব। আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন নেই।” ট্রাম্পের এই মন্তব্য তার পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্সির বাণিজ্যনীতি এবং ভারতের সঙ্গে তার শুল্কবিষয়ক বিতর্কেরই ধারাবাহিকতা।
ট্রাম্পের অভিযোগ ও ভারত
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যে উঠে আসে ভারত ও ব্রাজিলের বাইসাইকেলসহ নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে ১০০ থেকে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের উদাহরণ। তিনি দাবি করেন, এসব শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ২০১৯ সালেও ভারতকে ‘শুল্ক রাজা’ আখ্যা দিয়ে হার্লি-ডেভিডসন মোটরসাইকেলের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
বাণিজ্য সম্পর্কে টানাপোড়েন
বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানিতে শুল্ক বাড়ালে, ভারত পাল্টা বেশ কিছু মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপ করে। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়।
বর্তমানে বাণিজ্যের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪২.২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করলেও, রপ্তানি করেছে ৭৭.৫২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই বাণিজ্য ঘাটতি নিয়েও ট্রাম্প অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ভবিষ্যৎ সম্পর্কের সম্ভাবনা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই মন্তব্য ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত দেয়। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব দৃঢ় হয়েছে, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এই টানাপোড়েন দুই দেশের সম্পর্ক আরও জটিল করতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান তার আমেরিকা ফার্স্ট নীতিরই প্রতিফলন, যা বাণিজ্য ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সমতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া। তবে এই ধরনের শুল্ক নীতি কার্যকর হলে বিশ্ব বাণিজ্যে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।