এক দশক আগে দেশে প্রথম জিকা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর এবার একই এলাকায় পাঁচজনের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (৩ মার্চ) সংস্থাটি তাদের ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে জানায়, ২০২৩ সালে সংগ্রহ করা নমুনা বিশ্লেষণ করে তারা ক্লাস্টার সংক্রমণের প্রমাণ পেয়েছে। গবেষকরা জানান, বাংলাদেশে পাওয়া এই জিকা ভাইরাস স্ট্রেইন এশিয়ান লাইনেজের অন্তর্ভুক্ত, যা মাইক্রোসেফালি ও অন্যান্য স্নায়বিক সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, দেশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু, উষ্ণ তাপমাত্রা ও দীর্ঘ বর্ষাকাল এডিস মশার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এ কারণে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার পাশাপাশি এবার জিকা ভাইরাসও ছড়িয়ে পড়েছে।
২০১৬ সালে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পরিচালিত এক গবেষণায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে জিকা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তখন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২০১৪ সালে, যা ইঙ্গিত দেয় যে ২০১৫ সালে ব্রাজিলে প্রাদুর্ভাবের আগেই বাংলাদেশে গোপনে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছিল।
২০২৩ সালে ঢাকার রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে আসা ১৫২ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীর নমুনা পিসিআর পরীক্ষায় সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হয়। এর মধ্যে পাঁচজনের শরীরে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়। এই পাঁচজন এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করতেন এবং গত দুই বছরে তাদের কেউ-ই বিদেশ ভ্রমণ করেননি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, তারা একই সংক্রমণ চক্রের অংশ। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে একজনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাসও পাওয়া গেছে।
জিকা ভাইরাসের এই ক্লাস্টার সংক্রমণ দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।